একটা সময় ছিল যখন সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন না হতে পারাটাই বাংলার কাছে আফসোসের ছিল। এই প্রতিযোগিতার আটাত্তর বছরের ইতিহাসে তেত্রিশ বার সন্তোষ এসেছে বাংলার ঘরে। কিন্তু ইদানিং সেই ট্রফি যেন কিছুতেই ধরা দিচ্ছেনা বাংলাকে। সেই ২০১৬-১৭ মান্ডভি নদীর তীরে বাংলা ফুটবলের জয় নিশান উড়ানোর পর সাফল্য অধরাই থেকে গেছে। ফেলে আসা বছরের শেষ দিনে তেলেঙ্গানার মাটিতে সেই সাফল্য আবার স্পর্শ করলো বাংলার ছেলেরা।
স্বভাবতই উচ্ছ্বাসের হাওয়ায় ভাসছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। চারদিকে চলছে সংবর্ধনার আয়োজন। এর মধ্যে ব্যতিক্রম আইএফএ সংবর্ধনা। একথা ময়দানের আনাচে কানাচে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। সেদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রাক্তন ফুটবলাররাও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন এই উদ্যোগের। অশোক চন্দ। সাতের দশকে কলকাতা ময়দানে লাল হলুদ জার্সি পরে এই ফুটবলার অনেক সাফল্যের অধিকারী। তাঁর কথায়,' আমার খেলোয়াড় জীবনে আমি অনেক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু কখনও এই রকম অনুষ্ঠান দেখিনি।' এই রকম উদ্যোগ ভবিষ্যত প্রজন্ম কে অনুপ্রাণিত করবে বলে অশোক মনে করেন।
সাতের দশকেরই আরেক খ্যাতনামা গোলরক্ষক নাসির আহমেদ আবার মনে করেন শুধু সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলকে নয়, এমনকি সর্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতার সফলকেও সংবর্ধিত করার যে ভাবনা, তা আগে কখনও দেখা যায়নি।
রহিম নবী অনেক দিন বাংলার হয়ে খেলেছেন। বাংলা ফুটবলের অনেক সাফল্যের শরিক। তিনিও বলছেন,' অবশ্যই ভালো লেগেছে। শুধু তো সন্তোষ ট্রফি জয় নয়, বাংলার অন্যান্য কৃতি দলকেও যে ভাবে সংবর্ধিত করল এই ভাবনাটাই আগে কেউ ভাবেনি।
একমত দিপেন্দু বিশ্বাস। বাংলার হয়ে একাধিক সন্তোষ ট্রফি জয়, সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে তাঁর গোলেই বাংলা জয়ের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে, সেই দিপেন্দু বলছিলেন, ' শুধু সন্তোষ ট্রফি নয়, আমি রাঁচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় গেমসে বাংলাকে নেতৃত্ব দিয়ে পদক এনেছি, কখনও সংবর্ধনা পাইনি। সেদিক থেকে এই প্রজন্মের ফুটবলাররা অনেক বেশি ভাগ্যবান। বর্তমান রাজ্য সরকার ও আইএফএ যে ভাবে বাংলার ফুটবলারদের উৎসাহিত করলেন বাংলার ফুটবলারদের সেটা মাথায় রাখা উচিত।' আর একটা বিষয় সব প্রাক্তন ফুটবলারের নজর কেড়েছে। তা হল, রাজ্য ফুটবল সংস্থা আইএফএ এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যে ভাবে প্রাক্তন ফুটবলার দের সামিল করেছিল ,তাদের হাত দিয়ে এই প্রজন্মের ফুটবলারদের সংবর্ধনা দিয়েছে তা তাঁদের সম্মানিত করেছে।
Powered by Froala Editor